ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৯ জনের মৃত্যু মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি ফুলবাড়ীতে প্রতিপক্ষের গাড়ি ভাঙচুর ও মারপিট ৩১ শয্যার হাসপাতালে ২২ পদ শূন্য, ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেননি ডিসি আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা বান্দরবানে হত্যা মামলা তুলে নিতে হুমকি আমতলীতে ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২২জন স্টাফদের মধ্যে১৬ জনের শুন্যপদ থাকায় চিকিৎসাসেবা ঝুঁকে পরছে হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি
জিরো পয়েন্টে সবাই ছিল, ছিল না আওয়ামী লীগ

ঢাকায় দিনভর উত্তেজনা

  • আপলোড সময় : ১১-১১-২০২৪ ০৫:১৯:৪৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-১১-২০২৪ ০৫:১৯:৪৮ অপরাহ্ন
ঢাকায় দিনভর উত্তেজনা
শহীদ নূর হোসেন দিবস

শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে’ গতকাল রোববার গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। এরপর গণজমায়েতের কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ‘পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে’ গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় জিরো পয়েন্টে গণজমায়েত করে ছাত্র-জনতা। কর্মসূচি ঘোষণা পর গত শনিবার রাতেই গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি, গণ অধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। অথচ আওয়ামী লীগ গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়ে তারা মাঠে ছিল না। তবে রোববার সকালে কর্মসূচী স্থগিত করেছে আওয়ামী লীগ। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ নভেম্বর রাজধানীর জিরো পয়েন্টের কর্মসূচী স্থগিত করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সব্যই স্ব স্ব ইউনিটের সাথেই থাকুন।
সরজমিনে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ব্যানারে একদল ছাত্র-জনতা গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ করছেন। তারা ‘খুনি কেন বাহিরে, মুগ্ধ কেন কবরে,’ ‘নূর হোসেন দিচ্ছে ডাক, খুনি শেখ হাসিনা নিপাত যাক’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসময় তারা শেখ হাসিনার বিচারের দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিরীহ ব্যক্তিদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এখনো রক্তের দাগ শুকায়নি। এর মধ্যেই শেখ হাসিনা সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। আমরা ছাত্রজনতা কোনোভাবেই এটা করতে দেব না।
এর আগে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের সামনে জড়ো হন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বাড়তে থাকে তাদের সংখ্যা। দুপুর ১২ টার দিকে সেখানে প্রায় দেড় হাজার বিএনপির নেতা-কর্মীর উপস্থিতি ছিল। অনেকের হাতেই লাঠি সোঁঠা দেখা যায়। এ সময় সেখান সন্দেহভাজন কয়েকজনকে মারধরও করা হয়। ফোন চেক করে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এখন পর্যন্ত অন্তত থেকে ৩০ জনকে মারধরের খবর পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ মারধরের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে যায়।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে একের পর এক শোডাউন করে যাচ্ছে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। কঠোর অবস্থান নিয়ে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও প্রতিহত করতে স্লোগান দেয়। দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, আমি ভোর ৬টা থেকে এখানে আছি, এখান থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩০ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। তাদের সাথে কথা বলে সন্দেহ হলে আটক করে পুলিশে দিচ্ছেন তারা। জিরো পয়েন্টে থেকে স্টেডিয়ামমুখী সড়কটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে মঞ্চ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। সেখানে ছাত্র-জনতা উপস্থিত হয়ে কবিতা আবৃত্তি করে যাচ্ছে, একইসাথে আওয়ামী লীগ-বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। সচিবালয়ের পূর্বপাশে এক যুবক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে দেখা গেছে। 
এদিকে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে অর্ধশতাধিক পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এসব কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয় সে জন্য এলাকার চারপাশে অবস্থান নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন ইউনিট। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন রমনা জোনের ডিসি, এডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসব কর্মসূচির জন্য সড়কে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় সে জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। ইউনিফর্ম ও ইউনিফর্ম ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশের এপিসি, জলকামানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। জিরো পয়েন্টের আশপাশে নিরাপত্তা আরও বেশি জোরদার করা হয়। মোড়ে মোড়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি। সচিবালয়ের সামনে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় দুই শতাধিক সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। সংঘর্ষের আশঙ্কায় গুলিস্তান, জিরো পয়েন্টের আশপাশে এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অনেকটাই কম। এসব এলাকার দোকানপাটও রোববার খোলেনি। ব্যক্তিগত যানবাহনের চলাচলও বেশ কম দেখা যায়।
সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রাত থেকেই গুলিস্থান এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে কোনো অসুবিধা যেন না হয় সে বিষয়গুলো আমরা খেয়াল রাখছি। কর্মসূচি ঘিরে যেন যানজট সৃষ্টি হয়, আমাদের সদস্যরা সড়কে সে বিষয়ে কাজ করছেন।
শ্রদ্ধা জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেন জীবন দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগ নূর হোসেনকে নিজেদের দলের বলে দাবি করত। আসলে সে ছিল সাধারণ মানুষ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকার গঠনের সময় দেশের সব মানুষের সমর্থন ছিল। তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারা, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করায় সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার শাহরিয়ার আলী বলেন, যে কোনো কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। গুলিস্তানের কর্মসূচি ঘিরেও পুলিশের কঠোর অবস্থান রয়েছে। বিশেষ কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না। সেই সঙ্গে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাজপথে মিছিলে নেমেছিলেন। সেদিন পুলিশের গুলিতে মারা যান তিনি। তাকে হত্যার এই দিনে জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স